সাবধান, তিল থেকে তাল হতে সময় লাগবে না
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডট কম:
পায়ের পাতার নীচে একচিলতে কালো দাগ। অনেকটা বড়সড় তিলের মতো। প্রথমে ব্যথা-জ্বালা ছিল না। কিছু দিন বাদে শুরু হল। চিকিৎসককে দেখাতেই তিনি পায়ের কড়া কাটার মতো করে জায়গাটা কেটে দিলেন। ক’দিন সব ঠিকঠাক। আবার যে-কে-সে-ই! আবার ডাক্তার। আবার কাটা। এবার চিকিৎসক না-চাইলেও রোগির বাড়ির লোক এক প্রকার জোর করে বায়পসি করালেন।
আর তাতেই ধরা পড়ল, ব্যাপারটা মামুলি কিছু নয়। ক্যানসার! চামড়ার এক ধরনের কর্কট রোগ, যার পোশাকি নাম ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা। ধাক্কার এখানেই শেষ নয়। জানা গেল, রোগ শুধু পায়ের তলায় আটকে থাকেনি। উরুর উপর পর্যন্ত ডালপালা মেলেছে।
এ দেশে ত্বকের ক্যানসার প্রায় হয় না ভেবে যাঁরা নিশ্চিন্ত, তাঁরা নিঃসন্দেহে চমকে উঠবেন। উঠবে নানা প্রশ্নও। কারণ চিকিৎসকদের একটি বড় অংশের দাবি: মেলানোমা রোগটা সাদা চামড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, দেহের অনাবৃত অংশেই সাধারণত মেলানোমা-র উৎপত্তি হয়। রোগটার ‘বায়োলজিকাল’ আচরণ আগাম আঁচ করা কঠিন। খুব অল্প সময়ে অন্য অঙ্গে ছড়ানোর আশঙ্কাও প্রবল। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এর চিকিৎসা পদ্ধতি তথা সচেতনতা।
এক সময়ে ভাবা হতো, চামড়ার ক্যানসার হয় শুধু অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু জায়গায়। সেখানে শরীরের কোথাও আচমকা তিল দেখলে বায়পসি করার চল রয়েছে। আমাদের দেশে এ নিয়ে তেমন মাথা ঘামানোর ব্যাপার কোনও সময়ই ছিল না। ছবিটা হঠাৎ বদলাচ্ছে কেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশে সবুজ দিন দিন কমছে। দ্রুত শিল্পায়ন হচ্ছে। উপরন্তু ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি ত্বকে ঢুকছে বেশি হারে। এ সবেরই পরিণাম ত্বকের ক্যানসার।
আমেরিকা, ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দাদের টাইপ ওয়ান ত্বক। মানে, খুব ফর্সা। ওই চামড়ায় মেলানিন কম থাকে। ফলে অতি বেগুনি রশ্মি শরীরে সরাসরি প্রবেশ করে। অন্য দিকে আমাদের চামড়া টাইপ ফোর বা ফাইভ। এতে মেলানিনের সুরক্ষা-বর্ম থাকায় ঝুঁকি কম। তবে আমাদের হাত-পায়ের তালুতে এক ধরনের মেলানোমা হয়, যা অনেকেই অবহেলা করেন। ফলে দ্রুত তা শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে যায়। এজন্য কোন রোগকেই ছোট করে দেখার উপায় নেই। কারণ, তিল থেকে তাল হতে সময় লাগে না।
প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল